চট্টগ্রাম জেলার বাকলিয়ায় ঘরে ঢুকে এক নারীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার নূর আলম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বাকলিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, এ মামলার প্রধান আসামি শাহ আলমের ছোট ভাই নূর আলম সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আল ইমরান খানের আদালতে তার জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
গত শনিবার রাতে বাকলিয়ার বলিরহাট বজ্রঘোনা এলাকায় মদিনা মসজিদের পাশে ওই বাড়িতে ঢুকে বুবলি আক্তার নামে ২৮ বছর বয়সী এক নারীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়।
পরে পুলিশ জানায়, হামলাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল বুবলির ভাই রুবেলকে হত্যা করা। শ্বশুড়বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা বুবলি ওই সময় ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হন।
হত্যাকাণ্ডের পর সেই রাতেই মামলার প্রধান আসামি শাহ আলম পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। আর শাহ আলমের ছোট ভাই নূর আলম, তাদের সহযোগী নবী হোসেন, মো. মুছা ও আহমদ কবিরকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
নবী, মুছা ও কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার তিন দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। বুবলির বাবা নোয়া মিয়া যে ছয় জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন, তাদের মধ্যে জাবেদ নামে একজন এখনও পলাতক।
মামলার এজাহারে নোয়া মিয়া বলেছেন, তার ছেলে রুবেল পেশায় কাঠমিস্ত্রি। ওই এলাকার ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদকসেবী’ শাহ আলম টাকা দাবি করেছিল রুবেলের কাছে। তা না পেয়ে শনিবার রাতে সে দলবল নিয়ে রুবেলকে খুঁজতে বাসায় হানা দেয়। বুবলি তাদের বাধা দিলে তার ‘মুখে পিস্তল ঠেকিয়ে’ গুলি করে শাহআলম।
আদালতে নূর আলমের দেওয়া জবানবন্দির বরাতে ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, শাহ আলম, রুবেল ও স্থানীয় হাসান একসময় পরস্পরের বন্ধু ছিলেন। বছর দেড়েক আগে হাসানকে ছুরি মরেন শাহ আলম। এরপর তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়।
শাহ আলম তখন গ্রেপ্তার হলেও কয়েক মাস পর জামিনে ছাড়া পেয়ে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে এবং মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে।
নূর আলম তার জবানবন্দিতে বলেছেন, রুবেল ও হাসানকে ‘মারার জন্য’ শনিবার রাত ৮টার দিকে শাহ আলম তাদের সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে যান। শাহ আলম ও জাবেদের হাতে তখন পিস্তল ছিল। বাকি সবার হাতে ছিল ছুরি ও কিরিচ।
ওসি বলেন, ‘ওই দলবল দেখে রুবেল পালিয়ে যায়। হাসান ও রুবেলকে না পেয়ে শাহ আলম উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করে। রুবেলের বাসায় গিয়ে জাবেদ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। রুবেলের বোন বুবলি তখন বাসা থেকে বেরিয়ে এলে শাহ আলম তাকে গুলি করে বলে জবানবন্দিতে জানিয়েছে নূর আলম।’
পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে জানিয়ে ওসি বলেন, পলাতক আসামি জাবেদকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।